Special welcome gift. Get 50% off your first purchase with code “FahimsSchool”.

0

Shopping cart

Close

No products in the cart.

রুকইয়াহ করার আয়াত এবং হাদিস

  • February 13, 2025

রুকাইয়া বা রুকইয়াহ (Ruqyah) হলো ইসলামিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যা কুরআনের আয়াত, হাদিস এবং দোয়ার মাধ্যমে রোগ বা সমস্যার সমাধান করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি জিন, বদ নজর, জাদু-টোনা এবং অন্যান্য আধ্যাত্মিক সমস্যার চিকিৎসার জন্য প্রয়োগ করা হয়। রুকাইয়া শরিয়াহ সম্মত পদ্ধতি, যা শিরক বা কুফরি থেকে মুক্ত। নিম্নে রুকাইয়া সম্পর্কিত কুরআনের আয়াত, হাদিস এবং এর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো।


কুরআনের আয়াতসমূহ

রুকাইয়ার জন্য কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ব্যবহার করা হয়। এগুলোর মধ্যে কিছু আয়াত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য:

  1. সূরা ফাতিহা (আল-ফাতিহা ১:১-৭)
  • সূরা ফাতিহাকে “শিফা” বা নিরাময়ের সূরা বলা হয়। এটি রুকাইয়ার অন্যতম প্রধান অংশ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “সূরা ফাতিহা প্রতিটি রোগের জন্য ঔষধ।” (সহিহ বুখারি)।
  1. আয়াতুল কুরসি (সূরা আল-বাকারা ২:২৫৫)
  • এই আয়াতটি জিন ও শয়তানের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতে আয়াতুল কুরসি পড়ে, আল্লাহ তার জন্য একজন রক্ষী নিযুক্ত করেন, যতক্ষণ না সে সকাল করে।” (সহিহ বুখারি)।
  1. সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস (সূরা ১১২, ১১৩, ১১৪)
  • এই তিনটি সূরা রুকাইয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “এই সূরাগুলো হলো কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।” (সহিহ বুখারি)। তিনি আরও বলেছেন, “এই সূরাগুলো দিয়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো, কারণ এর চেয়ে উত্তম কোনো আশ্রয় নেই।” (সুনান আবু দাউদ)।
  1. সূরা ইউনুস (১০:৫৭)
  • “হে মানুষ! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং তোমাদের অন্তরে যা আছে তার জন্য শিফা (নিরাময়) এবং মুমিনদের জন্য হিদায়াত ও রহমত।”
  1. সূরা আল-ইসরা (১৭:৮২)
  • “আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করেছি, যা মুমিনদের জন্য শিফা ও রহমত।”

হাদিসসমূহ

রুকাইয়া সম্পর্কিত হাদিসগুলো এর বৈধতা ও পদ্ধতি সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেয়। নিম্নে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস উল্লেখ করা হলো:

  1. রুকাইয়ার বৈধতা
  • আয়িশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তার পরিবারের সদস্যদের রুকাইয়া করতেন। তিনি সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে ফুঁক দিতেন। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)।
  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “রুকাইয়া তখনই বৈধ, যখন তা শিরকমুক্ত হয়, কুরআন বা সুন্নাহভিত্তিক হয়।” (সহিহ মুসলিম)।
  1. জিন ও জাদুর চিকিৎসা
  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “জিন ও বদ নজরের প্রভাব সত্য।” (সহিহ বুখারি)। তিনি আরও বলেছেন, “বদ নজর সত্য, এবং যদি কোনো কিছু ভাগ্যের অগ্রগতি পরিবর্তন করতে পারে, তবে তা হলো বদ নজর।” (সহিহ মুসলিম)।
  1. রুকাইয়ার পদ্ধতি
  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা রুকাইয়া করো, যদি তা শিরকমুক্ত হয়।” (সহিহ মুসলিম)। তিনি আরও বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়, সে যেন সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে।” (সুনান আবু দাউদ)।
  1. রোগ নিরাময়ে রুকাইয়া
  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা রোগের চিকিৎসা করো, কারণ আল্লাহ এমন কোনো রোগ সৃষ্টি করেননি, যার নিরাময় নেই।” (সুনান আবু দাউদ)। তিনি আরও বলেছেন, “কুরআন হলো মহান নিরাময়।” (সহিহ বুখারি)।
  1. রুকাইয়ার সময় দোয়া
  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা আল্লাহর কাছে শিফা চাও, কারণ তিনিই একমাত্র নিরাময়কারী।” (সহিহ বুখারি)। তিনি আরও বলেছেন, “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই আমার শরীর, আমার কান, আমার চোখ, আমার মাথা, আমার হাড় এবং আমার রক্তের ক্ষতি থেকে।” (সুনান আবু দাউদ)।

রুকাইয়ার পদ্ধতি

রুকাইয়া শরিয়াহ সম্মত পদ্ধতিতে করতে হবে। নিম্নে এর ধাপগুলো উল্লেখ করা হলো:

  1. ইখলাস ও তাওয়াক্কুল
  • রুকাইয়ার সময় শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে এবং কোনো ধরনের শিরক বা কুফরি থেকে দূরে থাকতে হবে।
  1. কুরআনের আয়াত ও দোয়া পড়া
  • সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে ফুঁক দেওয়া। এছাড়া হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো পড়া।
  1. ফুঁক দেওয়া
  • আয়াত বা দোয়া পড়ে রোগীর উপর ফুঁক দেওয়া। এটি হাত দিয়েও করা যেতে পারে।
  1. জায়েয দোয়া
  • “আল্লাহুম্মা রাব্বান নাস, আজহিবিল বাস, ওয়াশফি আন্তাশ শাফি, লা শিফা ইল্লা শিফাউকা, শিফান লা ইয়ুগাদিরু সাকামা।” (হে আল্লাহ! মানুষের রব, রোগ দূর করো এবং শিফা দাও, তুমিই শিফাদানকারী, তোমার শিফা ছাড়া কোনো শিফা নেই, এমন শিফা দাও যাতে রোগ ফিরে না আসে।) (সহিহ বুখারি)।
  1. অযু ও পবিত্রতা
  • রুকাইয়ার সময় অযু অবস্থায় থাকা উত্তম।
  1. আস্থা ও ধৈর্য
  • রুকাইয়ার পর ফলাফলের জন্য ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখা।

সতর্কতা

রুকাইয়া শরিয়াহ সম্মত পদ্ধতিতে করতে হবে। কোনো ধরনের শিরক, কুফরি বা বিদআত থেকে দূরে থাকতে হবে। কিছু লোক রুকাইয়ার নামে জাদু-টোনা বা অবৈধ পদ্ধতি ব্যবহার করে, যা সম্পূর্ণ হারাম। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।


রুকাইয়া হলো ইসলামিক চিকিৎসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। এটি শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে এবং শরিয়াহ সম্মত পদ্ধতিতে করতে হবে। রুকাইয়ার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও শিফা লাভ করা যায়, তবে এর জন্য ইখলাস, তাওয়াক্কুল এবং সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You May Also Like

Advocate Md. Sharif Hossain is a skilled and dedicated lawyer specializing in criminal and civil cases. Born in Ramganj, Lakshmipur...
অ্যাডভোকেট মো. শরীফ হোসেন একজন দক্ষ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আইনজীবী, যিনি ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলায় বিশেষজ্ঞ। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলায়...
Did you know that 72% of businesses using AI-generated content in 2025 report a 40% reduction in production costs while doubling their...
The world of artificial intelligence update is moving at lightning speed. In 2025, the latest AI advancements are changing how...